গিরীন্দ্রশেখর বসু
গিরীন্দ্রশেখর বসু (১৮৮৭-১৯৫৩) : জন্ম দ্বারভাঙায়। পিতা চন্দ্রশেখর বসু। ১৯১১ থেকে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগ দেন এবং ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। গিরীন্দ্রশেখর বসু ছিলেন একাধারে মনােবিজ্ঞানী এবং রসসাহিত্যিক। ভারতবর্ষে সাইকো-অ্যানালিটিক্যাল সােসাইটি তিনিই স্থাপন করেন। মূলত তাঁরই উদ্যোগে মানসিক রােগীদের চিকিৎসার্থেকলকাতার উপকণ্ঠে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লুম্বিনি পার্ক। উত্তর কলকাতার ১৪ নম্বর পার্শীবাগানস্থ পৈতৃক নিবাসে ভাই রাজশেখরের সহায়তায় তিনি যে তিন শয্যাবিশিষ্ট মানসিক রােগের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন, আজকের লুম্বিনি পার্কতারই বিবর্তিতরূপ। তাঁরই প্রচেষ্টায় এককালে মনােবিজ্ঞানের ওপর একটি চমৎকার সুসম্পাদিত মাসিক পত্রিকাও বেরিয়েছিল। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে ড. গিরীন্দ্রশেখর বসুর নেতৃত্বে রাধাগােবিন্দ কর প্রতিষ্ঠিত তৎকালীন কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মনােরােগ বিভাগ চালু হয়, সাধারণ হাসপাতালের ক্ষেত্রে যা এশিয়ার মধ্যে প্রথম।
প্রথম বাঙালি মনােবৈজ্ঞানিক গিরীন্দ্রশেখর বসু ফ্রয়েড সাহেবের ছাত্রস্থানীয় হলেও মনস্তত্ত্বের এই কিংবদন্তী পথিকৃতের সঙ্গে ভিন্নমত পােষণ করতে দ্বিধা করেননি। নিজেদের মধ্যে কুড়ি বছর কথাবার্তা চালিয়ে ফ্রয়েড-বােস করেসপন্ডেন্স তৈরি করেছিলেন। বলতে গেলে এশিয়ার প্রথম মনােরােগ চিকিৎসক গিরীন্দ্রশেখর বসু। মনস্তত্ত্বের ওপর বিস্তর বইপত্র পাওয়া গেলেও, মনােবিশ্লেষণের ওপর বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বই স্বপ্ন, যার লেখকগিরীন্দ্রশেখর বসু। কাজের ফাঁকেতিনি নানা বিষয়ে লিখতেন। Everyday Psycho Analysis, Concept of Repression প্রভৃতি তার লেখা অন্যান্য স্মরণীয় গ্রন্থ।
মেডিক্যাল কলেজেশারীরবিদ্যারঅধ্যাপকেরএবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাবনম্মাল সাইকোলজি বিভাগেরঅধ্যাপকের গুরুদায়িত্ব তিনি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন। মনােবিদ্যার আধুনিকপরিভাষা নির্মাণে অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন গিরীন্দ্রশেখর।
You must be logged in to post a comment.